অপারেশন ডেবিল হান্ট কি
অপারেশন ডেবিল হান্ট কি? কারা পরিচালনা করবে এই অভিযান?
আর অপারেশন ডেবিল হান্ট এর উদ্দেশ্য কি? এবং কাদেরকে গেপ্তার করা হবে
এই সকল বিষয় নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের আর্টিকেলে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে সারা দেশে একযোগে পরিচালিত হচ্ছে
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন
প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপারেশন পরিচালনা করে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
পেজ সূচিপত্রঃ
অপারেশন ডেবিল হান্ট কি
ডেবিল শব্দের অর্থ শয়তান। আর হান্ট শব্দের অর্থ শিকার। অর্থাৎ, ডেবিল
হান্ট শব্দের একত্রে অর্থ দাঁড়ায় "শয়তান শিকার করা"। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে
অপারেশন হান্ট বলতে দেশবিরোধী চক্রবর্তী সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের
গ্রেফতারের কথা বোঝানো হয়েছে।
এই সম্পর্কে সচিবালয়ের এক সম্মেলনে ষষ্ঠ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব
নাসিমুল গনি বলেন প্রতিটি অপারেশনের একটি কোড নাম দেওয়া হয় যাতে
অপারেশনকে বিশেষ করে ফোকাস করা যায়। সেই হিসেবে এই অপারেশনের নায দেওয়া
হয়েছে 'অপারেশন ডেবিল হান্ট'
আরো পড়ুনঃ ইসলামি আইনে ধর্ষণের শাস্তি কি
অপারেশন ডেবিল হান্ট এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে পতিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নষ্ট না করতে পারে সেজন্য এই অপারেশন পরিচালনা করা হচ্ছে অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সকল সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করার জন্য এই অপারেশন।
অপারেশন ডেভিল হান্টের লক্ষ্য
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা যায় পতিতা আওয়ামী লীগ সরকারের সন্ত্রাসীরা দেশকে অকার্যকর করে তোলার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রময় ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে শেখ হাসিনা ও তাদের বল বল ষড়যন্ত্র করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে বলে জানা গেছে। তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশে কয়েকটি সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংঘটিত হয়েছে তাই দেশের সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ও সন্ত্রাসীদের দমন করার জন্য অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করা হয়েছে এ লক্ষ্য পূরণে সারা দেশে একযোগে অপারেশন পরিচালনা করা হচ্ছে।
অপারেশন ডেভিল হান্ট এর সাথে জড়িত সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি কারীদের চিহ্নিত করে সন্ত্রাসীরা কিভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেগুলো সনাক্ত করে। শনাক্তির পর সারা দেশে একসাথে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়। এছাড়া আরও জানা গেছে অপারেশন পতিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দেশের নষ্ট করতে না পারে সেই বিষয়েও কাজ করবে।
অপারেশন ডেভিল হান্ট কি কারণে শুরু হয়েছে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ২০২৫ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু করা হয়। অভিযানটি গাজীপুরে বুলডোজার কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রদের উপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে শুরু করা হয়। বুলডোজার কর্মসূচি অংশ হিসেবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার প্রাক্তন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ সদস্যরা শিক্ষার্থীর ওপর আক্রমণ চালিয়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে আহত করে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয় এরই ধারাবাহিকতায় ৮ই ফেব্রুয়ারি অপারেশন ডেভিল হান্ট নামক এই অভিযানটি শুরু করা হয়।
অপারেশন ডেভিল হান্ট কারা পরিচালনা করে
অপারেশন ডেভিল হান্ট নামক সন্ত্রাসী নির্মূলের এই অভিযান নির্দিষ্ট কোন বাহিনী পরিচালনা করে না। বরং এটি যৌথভাবে পরিচালনা করা হয়। এই যৌথ বাহিনীর মধ্যে রয়েছে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবি।
দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য কে বিচার বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের অবস্থান চিহ্নিত করে সন্ত্রাসীদের সকল আস্তানায় একসাথে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করা হয়। এবং সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেপ্তার করা আইনের আওতায় আনা হয়।
কতদিন পর্যন্ত চলবে অপারেশন ডেভিল হান্ট
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে অপারেশন ডেভিল হান্ট দির্ঘমেয়াদী হবে। এই অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ে বেশ কিছু সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হয়েছে। একই সাথে বেশকিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে এ অভিযান দীর্ঘস্থায়ী করা হবে এবং সন্ত্রাসীদের মূল উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছে ডেবিল যতদিন শেষ না হবে ততদিন পর্যন্ত অপারেশন ডেভিল হান্ট চলবে। অর্থাৎ, এই কথা থেকে বোঝা যায় অপারেশন ডেভিল হান্ট সন্ত্রাসের নির্মূল করার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী হবে। পুরোপুরি ভাবে বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসী দমন না করা পর্যন্ত অপারেশন ডেভিল হান্ট বন্ধ হবে না।
শেষ কথা
আজকে আটকে এর মধ্যে অপারেশন ডেভিল হার্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা করা চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলের মধ্যে কোন ফুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এবং আজকের মধ্যে থাকা ভুলগুলো কমেন্টে ধরিয়ে দিতে ভুলবেন না। সবশেষে একটি কথা বলি সন্ত্রাসী দমনে সবাই এগিয়ে আসুন তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
শেষ পাতার কমেন্ট পলিসি মেনে কমেন্ট করুন।
comment url