কি খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়
কি খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়? অনেকে শরীর খুবই দুর্বল। দুর্বলতা কাটানোর জন্য
অনেকেই বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে তবে ওষুধ থেকে বেশি কার্যকরী হল
প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরের দুর্বলতা দূর করা।
আজকে আপনাদেরকে জানাতে চলেছি কি খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়। কোন কোন খাবারে
শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না। এছাড়াও দুর্বলতা দূর
করার জন্য কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
পেজ সূচিপত্রঃ
কি খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়
অনেক সময় আমাদের শরীর খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে
পড়লে বিভিন্ন প্রকার ওষুধের মাধ্যমে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মতে চিকিৎসা
গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠার পর আগের মত আর শক্তি ফিরে পাওয়া যায় না।
শরীর দুর্বল মনে হয়। বিশেষ করে একাধারে অনেকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বিছানায়
পড়ে থাকলে এই সমস্যা দেখা দেয়। অসুখ যতটা গুরুতর রূপ ধারণ করে এই শারীরিক
দুর্বলতাও তত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তাই আমাদের সকলের জানা উচিত শরীর
সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর কি খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা কি
শরীরের দুর্বলতা দূর করার জন্য আমরা প্রাকৃতিক বিভিন্ন খাবার খেতে পারি।
বিভিন্ন দেশীয় ফলমূল, শাকসবজি, দুগ্ধজাত খাবার, আমিষ খাবার সহ বিভিন্ন
ধরনের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে সকল খাবার খেলে
শরীর দুর্বলতা খুবই তাড়াতাড়ি দূর হয় সে সকল খাবার নিয়েই নিচে বিস্তারিত
আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও শরীরের দুর্বলতা দূর করার জন্য কোন কোন খাবার
এড়িয়ে চলা উচিত সেই বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
দুগ্ধজাত খাবারে শক্তি বৃদ্ধি করে
দুধ এমন একটি খাবার যা বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ সকলের জন্যই খুবই উপকারী। আর দূর
থেকে তৈরি সকল খাবারই দুধের পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকে। তাই আমাদেরকে দূর
থেকে তৈরি সকল প্রকার খাবার বেশি বেশি খাওয়া উচিত। দুধে প্রোটিন,
ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ফসফরাস,
পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রাকৃতিক চর্বি, প্রাকৃতিক চিনিসহ অসংখ্য
পুষ্টিগুণ বিদ্যামান রয়েছে।
তাই শরীরের দুর্বলতা দূর করতে দুগ্ধজাত খাবার যেমন পনির, ছানা, দই,
রসগোল্লা, মাখন, ঘি, ছানার পায়েস, বারফি সহ দুধ থেকে তৈরি আরো অনেক খাবার
রয়েছে। যেগুলো খেলে শরীরে দুর্বলতা দূর হয় এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি
করে। তাই শরীরের দুর্বলতা দূর করার জন্য আমাদের দুগ্ধজাত খাবার
খাওয়াকে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।
তাজা ফল খেলে শক্তি বাড়ে
ফল খেলে শক্তি বাড়ে, থাকে না রোগ শরীরে, ভিটামিনে ভরপুর তাই, সবাই খাবে
নির্ভরে।
আম, কাঁঠাল, কলা, পেয়ারা, পুষ্টি দেয় যে কত, নিয়ম করে খেলে সবার,
থাকবে শরীর সত।
অর্থাৎ দেশীয় বিভিন্ন ফল যেমন আম কাঁঠাল কলা পেয়ারা বড়ই সহ বিভিন্ন
দেশীয় ফল শরীরের শক্তি বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং
দুর্বলতা দূর করে। তাই আমাদের সকলের উচিত নিয়মিত তাজা ফল খাওয়া। তবে ফল
খাওয়ার আগে অবশ্যই তার প্রিয়রিটি যাচাই করে নেওয়া উচিত কারণ বাজারে
বিভিন্ন প্রিজারভেটিভ যুক্ত ফল পাওয়া যায়। ভালো হয় যদি নিজের গাছে ফল
থাকে যদি নিজেই ফল চাষ করতে না পারেন তাহলে অবশ্যই বাজার থেকে ফল কিনে
ভালোভাবে পরিষ্কার করে তারপর খাওয়া উচিত। নিয়মিত ফল খান সুস্থ জীবন
গড়ুন।
আমিষ শারীরিক শক্তি বাড়ায়
আমাদের শরীরে আমিষের চাহিদা অনুযায়ী নিয়মিত আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া
উচিত। আমিষ জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছি মাংস, মাছ, ডিম, ডাল ইত্যাদি। তবে
মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই চর্বি মুক্ত মাংস খেতে হবে চর্বিযুক্ত মাংস
শরীরের ফ্যাট বৃদ্ধি করে। একজন ৬০কেজি ওজনের ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন (০.৮
পার কেজি) গড়ে ৫০ গ্রাম আমিষ খাওয়া উচিত। অন্যদিকে কিশোর কিশোরীদের জন্য
কিছুটা বেশি (১-১.৫ পার কেজি) পরিমাণ আমিষ খাওয়া উচিত। এবং যারা নিয়মিত
ব্যায়াম করেন অথবা ভারী কাজ করেন তাদের জন্য (১ পার কেজি) গড়ে ৯০ গ্রাম
আমিষ খাওয়া উচিত।
প্রোটিন জাতীয় খাবার দুর্বলতা দূর করে
শরীরের দুর্বলতা দূর করার জন্য প্রোটিন জাতীয় খাবারের বিকল্প নেই। শারীরিক
অসুস্থতা থেকে মুক্তি পাবার পর শরীরে যে দুর্বলতা দেখা দেয় সেই দুর্বলতা
দূর করার জন্য আমরা নিয়মিত প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়াকে গুরুত্ব দিতে
পারি। প্রোটিন শরীরের কোষ, পেশি, হরমোন ও বিভিন্ন এনজাইম তৈরিতে সাহায্য
করে এর মাধ্যমে শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
এবং শরীরের দুর্বলতা দূর করে। তাই সকলেরই পরিমাণ মতো প্রচিন যুক্ত খাবার
খাওয়া উচিত।
নির্দিষ্ট চিকিৎসার মাধ্যমে দুর্বলতা কমানোর উপায়
অনেক সময় নির্দিষ্ট কোন কারণে মানুষের শরীরে দুর্বলতা দেখা যায়।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার ফলমূল সহ অন্যান্য অনেক ধরনের খাবার
খেয়ে অনেক ভাবে চেষ্টা করেও দুর্বলতা দূর করা যায় না। তখন অবশ্যই একজন
ভালো মানের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
নির্দিষ্ট চিকিৎসার মাধ্যমে দুর্বলতা দূর করা উচিত। কোন রোগকেই ছোট করে
দেখা উচিত নয়। হঠাৎ করে শরীর দুর্বল মনে হলে অথবা দীর্ঘদিন চেষ্টা করার
পরেও দুর্বলতা কাকে উঠা সম্ভব না হলে সে গ্রহণ করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
আয়ুর্বেদিক ওষুধের গুনাগুন
দুর্বলতা কাটানোর জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক ওষুধ খাওয়ার
পরামর্শ দেন। অবশ্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ অনেকের ক্ষেত্রে শরীরের দুর্বলতা
কাটাতে বেশ কার্যকরী হিসেবে কাজ করে। তবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ সেবনের পূর্বে
অবশ্যই অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিয়ে সেবন করা উচিত। আয়ুর্বেদিক ওষুধের
মাধ্যমে কিছু মানুষের শারীরিক দুর্বলতা দূর হইলেও সকলের জন্য এটি কার্যকরী
না হলেও হতে পারে। তাই অবশ্যই আপনার দুর্বলতার কারণ, এবং এই সমস্যা কতদিন
ধরে আছে সকল দিক বিবেচনা করে অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন
করা উচিত।
যে সব খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ
শরীরের দুর্বলতা দূর করার জন্য কিছু খাবার এড়িয়ে চলা কারণ কিছু খাবারে
শক্তি কমিয়ে দিতে পারে এবং শরীরের কার্যকারিতা বাঁধাকস্ত করতে পারে এ সকল
খাবারের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়া জাত ও ফাস্টফুড, অতিরিক্ত তেল জাতীয়
খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও প্রিজারভেটিভ যুক্ত খাবার, সফটড্রিংকস, চকলেট,
অতিরিক্ত কোয়েল মল্লিক কফি এনার্জি অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার প্যাকেটজাত
স্ন্যাকস বা চিপস।
আরো পড়ুনঃ আলুর চিপস বানানোর পদ্ধতি
এছাড়াও আরো বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা হ্রাস পায়, এবং শরীরের দুর্বলতা বাড়ে, শরীরের শক্তি কমে আসে। তাই
শরীরের দুর্বলতা দূর করতে চাইনি বাইরের সমস্ত খাবার এড়িয়ে চলার জন্য
প্রয়োজনে সমস্ত কিছু ভাষাতে বানিয়ে খাওয়া উচিত। আপনি বাজার থেকে না কিনে
নিজ বাড়িতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি করে খেতে পারেন এতে শরীর-স্বাস্থ্য
ভালো থাকবে এবং শরীরের দুর্বলতা দূর হবে।
শেষ কথা
বলা হয়ে থাকে শরীরই সম্পদ। শরীর ভালো না থাকলে পৃথিবীর কোন কিছুই ভালো না
তাই নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া সকলেরই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। বিভিন্ন রোগ
সারানোর পর বা অন্য যেকোনো কারণে শরীরে দুর্বলতা দেখার জন্য সেই দুর্বলতা
কাটিয়ে তোলার জন্য যে সকল খাবার খাওয়া উচিত এবং যে সকল খাবার এড়িয়ে চলা
উচিত সেই বিষয় নিয়েই মূলত আজকে আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।
পরিশেষে একটি কথায় বলতে চাই আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি যদি কোন প্রকার
উপকার পেয়ে থাকেন অবশ্যই অন্যদের কাছে আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন।
প্রতিদিনের ন্যায় আজকেও একটাই কথা বলি কোন ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে ক্ষমার
দৃষ্টিতে দেখবেন। আর যদি আর্টিকেলের কোন জায়গায় কোনো ভুল তথ্য দেওয়া
থাকে তাহলে কমেন্টে জানয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইল।
শেষ পাতার কমেন্ট পলিসি মেনে কমেন্ট করুন।
comment url