গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া নিষেধ

গর্ভবস্থায় মা এবং সন্তানের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করি কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো যেকোনো খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সে সকল খাবার নিয়ে আজকে আলোচনা করব।
গর্ভাবস্থায়-কি-কি-খাওয়া-নিষেধ
নারীর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের নাম মা হওয়া‌। একজন নারী মা হওয়ার পর যতটা খুশি হয় অন্য কোন সময় এতোটা খুশি হয় না। তাই, গর্ভাবস্থায় কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

পেজ সূচিপত্রঃ

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া নিষেধ

গর্ব অবস্থায় প্রতিটি মায়ের শিশুর স্বাস্থ্যকর বিকাশের জন্য সবচেয়ে বেশি চিন্তা হয়। এ সময় মায়েরা খুবই সাবধানতা অবলম্বন করুন চলাফেরা করে এবং জীবন যাপন করেন। এ সময়ে কিছু খাবার মা ও শিশুর জন্য অত্যান্ত স্বাস্থ্যকর আবার কিছু খাবার তো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এমনই কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো সাধারণ অবস্থায় খাওয়া স্বাস্থ্যকর হলে গর্ভ অবস্থায় সেগুলোই ক্ষতির কারণ হতে পারে।
গর্ভ অবস্থায় কাঁচা ডিম, অ্যালকোহল, কাঁচা যেকোনো ধরনের ফল বা সবজি, প্যাকেটজ্যাট খাবার ও অন্যান্য আরো অনেক ধরনের খাবার আছে যেগুলো শিশু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এবং অতিরিক্ত পরিমাণ চিনিযুক্ত খাবার গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া নিষেধ সেগুলো জানার পর তা মেনে চলা উচিত।

কাঁচা ডিম খাওয়া উচিৎ নয়

গর্ভাবস্থায় কাঁচা ডিম অথবা অপর্যাপ্ত রান্না করার ডিম (হাফ বয়েল ডিম) খাওয়া উচিত নয়। এর কয়েকটি কারণ নিচে দেওয়া হলো:
  • সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামন: ডিমের ভিতর থার্মো লা ব্যাকটেরিয়া তে পারে যা খাদ্য বিষাক্ততা সৃষ্টি করে গর্ভাবস্থায় মহিলাদের সিস্টেম দুর্বল থাকে ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায় যার গর্ভে শিশুর জন্য খুবই ক্ষতিকর। 
  • গর্ভপাত বা প্রিম্যাচিউরড ডেলিভারির ঝুঁকি: কাঁচা ডিমে থাকা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে মায়ের শরীরের তীব্র জল বা ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি হতে পারে এতে শিশুর বিকাশ ঘটাতে বিঘ্ন হতে পারে; ফলে প্রিম্যাচিউরড লেবার বা গর্ভপাতের মতো সমস্যার সম্ভাবনা থাকে।
  • রান্নার গুরুত্ব: ভালোভাবে ডিম সিদ্ধ করলে বা ভাগলে ব্যাকটেরিয়া মরে যায় ফলে কোন ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না এবং তা নিরাপদে খাওয়া যায়।

অ্যালকোহল ও ধূমপান

অ্যালকোহল ধূমপান শহর সকল প্রকার নেশাজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এই ধরনের খাবার গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে বাধা দেয় পাশাপাশি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত করে তাই গর্ভাবস্থায় কোনভাবেই ধূমপান বা অ্যালকোহল গ্রহণ করা উচিত নয়।

অপরিষ্কার ও কাঁচা ফল বা সবজি

আমরা অনেক সময় কাঁচা সালাত খেয়ে থাকি বিশেষ করে টমেটো গাজর অথবা শসা খেয়ে থাকি। সাধারণ অবস্থায় এগুলো খাওয়া উপকার হইলেও গর্ব অবস্থায় কাঁচা সবজি খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও যে কোন ধরনের ফল বা সবজি খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত কারণ কিছু ফল বা সবজিতে ক্ষতিকর পরজীবী থাকতে পারে যা মাটি এবং পানি বাহিত জীবাণু সংক্রমনের মাধ্যমে গর্ভবতী মা ও শিশু রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পানীয় খাওয়ার সময় সতর্কতা 

আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা ইভেন্টে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেয়ে থাকি। কিন্তু এই ধরনের অতিরিক্ত ক্যাফেইন থাকাই গর্ভে থাকা শিশুর বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করতে পারে তাই গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সকল ধরনের সফটওয়্যার চা কফি সহ অন্যান্য ক্ষতিকর পানীয় খাওয়া যাবেনা। কাঁচা দুধ গল্পের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে তাই কাঁচা দুধ এড়িয়ে চলতে হবে। তবে গর্ভপাতের ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন ধরনের চা, কফির পরিবর্তে গ্রিন টি বা হারবাল টি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পান করতে পারেন।

প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া যাবে না

বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত খাবার পাওয়া যায় যেমন ইনস্ট্যান্ট নুডুলস বিস্কুট চানাচুর সহ আরো অনেক কিছু এগুলোতে প্রিজারভেটিভ অতিরিক্ত পরিমাণ লবণ টেস্টি মসলা সহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান দেওয়া থাকে যা রক্তচাপ বাড়ায় এবং পুষ্টিহীনতা ঘটায়। তাই গর্ব অবস্থায় বাচ্চার শাস্তি দিকে লক্ষ্য করে কোন উপকার প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া উচিত নয়।

অতিরিক্ত চিনি ও ফাস্ট ফুড

অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি গর্ব অবস্থায় অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার এবং ফাস্টফুড পুরোপুরিভাবে এড়িয়ে চলতে হবে কারণ উচ্চমাত্রার চেঞ্জযুক্ত খাবার ওজন বৃদ্ধি করে এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে। ফলে শিশু পুষ্টি হীনতায় ভুগতে পারে।
অতিরিক্ত চিনি এবং ফাস্টফুড সকলের জন্যই ক্ষতিকর। তাই এ সকল খাবার না খাওয়ার চেষ্টা করাই শ্রেয়। তবে গর্ব অবস্থায় এগুলো খাবার একেবারেই খাওয়া উচিত না বিশেষ করে প্রয়োজনে এগুলো খাওয়ার দরকার হলে খুবই অল্প পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে তবুও স্বাস্থ্যের ওপর কোন প্রকার খারাপ প্রভাব না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

উচ্চ পারদের মাছ থেকে সাবধান

সামুদ্রিক বিভিন্ন ধরনের মা যেমন টোনা ভাঙ্গর সহ অন্যান্য যে সকল মাঠে পাড়েদের পরিমাণ বেশি সে সকল মাছ খাওয়া উচিত নয়। কারণ পারদ গর্ভে থাকা শিশু মস্তিষ্কের বিকাশে বাধাগ্রস্ত করে। সমুদ্রের বিভিন্ন মাছ খাওয়ার পরিবর্তে আপনি রুইমা পাঙ্গাস মাছ ইলিশ মাছ সহ দেশীয় মাছ খেতে পারেন। যে কোন ধরনের ছোট মাছ বেশি বেশি খাওয়া যেতে পারে। ছোট মাছ মা ও শিশু উভয়ের জন্যই উপকারী।

অপর্যাপ্ত রান্না করা খাবার

মাছ মাংস থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের কাঁচা খাবারের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী থাকতে পারে যা ফুড পয়জনিং এর ঝুঁকি বাড়াই এবং ডায়রিয়া সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও ভিক্টোরিয়া ও পরজীবীর কারণে শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে আর এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবীর অপর্যাপ্ত রান্না করার কারণে খাদ্যে থেকে যেতে পারে তাই সকল প্রকার খাবার ভালোভাবে পরিষ্কার করে পর্যাপ্ত পরিমাণ রান্না করে খাওয়া উচিত।

শেষ কথা

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া নিষেধ বা কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। ঝুঁকিমুক্ত গর্ভধারণের জন্য নিষিদ্ধ খাবারের তালিকা, বৈজ্ঞানিক কারণ ও স্বাস্থ্যকর বিকল্প এবং মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য কি কি করনীয় সেই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আজকে আর্টিকেলে। আজকের আর্টিকেলটি সকল গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আপনার পরিবারে যদি গর্ভবতী কেউ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই উপকারে আসবে। পরিশেষে একটা কথা বলি কোন ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে আমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ভুলগুলো কমেন্টের মাধ্যমে ধরিয়ে দিবেন। আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য ধন্যবাদ।
পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কোনো কমেন্ট করা হয় নি
কমেন্ট করতে ক্লিক করুন

শেষ পাতার কমেন্ট পলিসি মেনে কমেন্ট করুন।

comment url