মোটা না হওয়ার কারণ
মোটা না হওয়ার কারণ কি? মোটা না হওয়ার পিছনে পুষ্টির অভাব, জিনগত কারণ অথবা
অন্যান্য আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। আজকে সেই সকল কারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
তাই যাঁরা মোটা হতে চেয়েও সঠিক ফলাফল পাচ্ছেন না তাদের জন্যই আজকের আর্টিকেল।
আপনারা যারা দীর্ঘদিন যাবত মোটা হওয়ার চেষ্টা করছেন। মোটা হওয়ার জন্য বিভিন্ন
পদ্ধতি অবলম্বন করার পরেও আশানুরূপ ফলাফল পাচ্ছেন না। এবং কোনভাবেই বুঝতে পারছেন না
মোটা না হওয়ার কারণ কি? তাদেরকে আজকে মোটা না হওয়ার বিভিন্ন কারণ সম্পর্কে অবগত
করব।
পেজ সূচিপত্রঃ মোটা না হওয়ার কারণ কি
- মোটা না হওয়ার কারণ কি
- প্রয়োজনীয় ক্যালোরির অভাবে মোটা না হওয়া
- মোটা না হওয়ার পেছনে হরমোন জনিত কারণ
- খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টির অভাব
- হজম জনিত সমস্যার কারণে মোটা হতে বাধা
- জিনগত কারণে মোটা না হওয়া
- মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার প্রভাবে মোটা না হওয়া
- মোটা হওয়ার জন্য যে সব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
- চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারনে স্বাস্থ্য শুকিয়ে যাওয়া
- শেষ কথা
মোটা না হওয়ার কারণ কি
আমাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপাদান হল ক্যালোরি অর্থাৎ আমরা প্রতিদিন
যতটুকু খাবার খাই এবং সে খাবারের যতটুকু গ্যালারি পায় তার মধ্যে থেকে দৈনিক
কাজের মাধ্যমে কতটুকু ক্যালরি নষ্ট করছি। অর্জিত গ্যালারি থেকে ব্যায়কৃত ক্যালরি
বাদ দিলে যতটুকু গ্যালারি অবশিষ্ট থাকে সেগুলোই আমাদের শরীর মোটা হওয়া, হাড়
মজবুত হওয়া এবং শরীরের অন্যান্য দৈহিক বৃদ্ধিতে কাজ করে। তাই মোটা হতে চাইলে
দৈনিক খাবারের তালিকায় এক্সট্রা ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক
বার ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর ভাবে মোটা হওয়া
সম্ভব।
এক্সট্রা ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরেও শারীরিক, মানসিক, জীবন যাত্রার অভ্যাস,
জিনগত কারণ এবং হরমোনের কারণেও অনেকেই মোটা হতে পারে না। এছাড়াও হজমের
সমস্যা, মানসিক দুশ্চিন্তা অথবা নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার
কারণেও অনেক সময় শরীরে ইফেক্ট পড়তে পারে।এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্যের জটিলতাও
থাকতে পারে যা অনেক ক্ষেত্রে অদৃশ্য কারণ হিসেবে কাজ করে। তাই মোটা না হওয়ার
পিছনে মূল কারণটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয় ক্যালোরির অভাবে মোটা না হওয়া
মোটা না হওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ হলো প্রয়োজনীয় ক্যালোরির অভাব। প্রতিদিনের
খাবার থেকে পাওয়া ক্যালোরি প্রতিদিনের কাজ করার জন্যই ব্যয় হয়ে যায়। তাই শরীর
মোটা করতে চাইলে এক্সট্রা গ্যালারি গ্রহণ করতে হবে। এক্সট্রা স্যালারি গ্রহণ না
করা মোটা না হওয়ার অন্যতম কারণ। যেসব কারণে ক্যালোরির অভাবে ওজন বাড়ে না:
- শক্তির ঘাটতি: আপনার শরীর প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি ব্যবহার করে। প্রয়োজনীয় ক্যালোরি না পেলে সেই শক্তি ঘাটতি পূরণ করতে শরীর ফ্যাট ও পেশি ব্যবহার করে।
- ব্লাড সুগারের তারতম্য: কম ক্যালোরি গ্রহণ করলে ইনসুলিন হরমোন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, যা মেটাবলিজমের প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।
- পুষ্টির অভাব: ক্যালোরির অভাবে ভিটামিন, প্রোটিন, ও কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি হয়, যা পেশি গঠনের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে।
- বাজারি খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত ক্যালোরি না খেয়ে শুধু ফাস্ট ফুড বা পুষ্টিহীন খাবার খাওয়া হলে শরীরে প্রয়োজনীয় উপাদান জমা হয় না।
মোটা না হওয়ার পেছনে হরমোন জনিত কারণ
মোটা না হওয়ার পেছনে বিভিন্ন শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে হরমোনজনিত
কারণগুলো হতে পারে । হরমোন শরীরের বিপাক, ক্ষুধা, শক্তি সংরক্ষণ এবং অন্যান্য
গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ
হরমোনজনিত কারণ নিচে দেওয়া হলো:
- হাইপারথাইরয়েডিজম: থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত উৎপাদন হলে বিপাকের হার বেড়ে যায়, ফলে ওজন কমে যায় বা মোটা হওয়া কঠিন হয়। এবং, হাইপোথাইরয়েডিজম হলে ওজন বাড়তে পারে।
- লেপটিন: লেপটিন হলো এক ধরনের হরমোন যা ক্ষুধা এবং শক্তি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে। যদি লেপটিনের মাত্রা সঠিকভাবে কাজ করে, তবে এটি ক্ষুধা কমায় এবং শরীরের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
- কোর্টিসল: এটি একটি স্ট্রেস হরমোন। কোর্টিসলের মাত্রা বেশি হলে ওজন বাড়তে পারে, কারণ এটি ক্ষুধা বাড়ায়। কম মাত্রায় কোর্টিসল থাকলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার প্রবণতা কম হতে পারে।
- ইনসুলিন: ইনসুলিন রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেশি থাকলে শরীরের ফ্যাট সঞ্চয় কম হয়।
- গ্রেলিন: গ্রেলিন হলো "ক্ষুধা হরমোন" যা ক্ষুধা বাড়ায়। গ্রেলিনের উৎপাদন কম হলে ক্ষুধা কম থাকে, ফলে ওজন বৃদ্ধি কঠিন হয়।
- এস্ট্রোজেন: হরমোনের ভারসাম্যহীনতা যেমন পুরুষ বা নারীর যৌন হরমোনের ঘাটতি বা অতিরিক্ততা মোটা হওয়া বা না হওয়ার কারণ হতে পারে।
খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টির অভাব
মোটা না হওয়ার কারণ কি? নিশ্চয় পুষ্টির অভাব আর আমরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি
পায় খাদ্য থেকে। পুষ্টিহীনতা বা অসম্পূর্ণ খাদ্য অভ্যাস শরীরে প্রয়োজনীয়
ক্যালোরি, প্রোটিন, ফ্যাট এবং ভিটামিনের অভাব তৈরি করতে পারে যা ওজন
বাড়াতে বাঁধা সৃষ্টি করে।
মোটা হতে খাদ্যেতে যে ধরনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন:
- ক্যালরি: শরীরের চাহিদা তুলনায় কম ক্যালরি গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি সম্ভাব নয় তাই পর্যাপ্ত ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে।
- প্রোটিন: এটি শরীরের বেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কম প্রোটিন গ্রহণের ফলে বেশি ক্ষয় এবং ওজন বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার ব্যাহত হয়।
- ফ্যাট: বাদাম, অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো জাতীয় জাতীয় স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ডায়েটে যুক্ত করলে শরীরে ফ্যাট জমাতে সহায়তা করে।
- ভিটামিন: ভিটামিন বি এর ঘাটতি বিপাকীয় কার্যালাপ বাধাগ্রস্ত করে এবং ভিটামিন ডি হার মজবুত করে।
- বারবার না খাওয়া: মোটা না হওয়ার আগে একটি কারণ হতে পারে বারবার না খাওয়া কারণ প্রয়োজনীয় ক্যালোরির অভাব মেটাতে বারবার খেতে হবে।
- অস্বাস্থ্যকর খাবার: কম পুষ্টিকর খাবার খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শরীর পাই না তাই, প্রক্রিয়াজাত খাবার বা কম পুষ্টিকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
- খাবারে ক্যালোরি বৃদ্ধি: প্রতিদিনের খাবারে অতিরিক্ত ৫০০ - ৬০০ ক্যালরি যোগ করতে হবে।
হজম জনিত সমস্যার কারণে মোটা হতে বাধা
হজমজনিত সমস্যার কারণে মোটা হতে না পারা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা
খাদ্য হজম ও শোষণ প্রক্রিয়ার ব্যাঘাতের ফলে ঘটে। যখন শরীর সঠিকভাবে খাবার
হজম করতে বা প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করতে পারে না, তখন প্রয়োজনীয়
ক্যালোরি এবং পুষ্টি শরীরে জমা হয় না, যা ওজন বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে।
ম্যালঅ্যাবসর্পশন সিন্ড্রোম, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, বা ইরিটেবল বাওয়েল
সিন্ড্রোমের মতো অবস্থা হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। এছাড়া, দীর্ঘমেয়াদী
ডায়রিয়া, কৃমি, বা পাচনতন্ত্রের রোগও পুষ্টির অভাব তৈরি করে শরীর দুর্বল
হয়ে পড়ে এবং ওজন বাড়ানোর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
আরো পড়ুনঃ ইসলামিক নিয়মে মোটা হওয়ার উপায়
হজমজনিত সমস্যার আরেকটি কারণ হতে পারে এনজাইমের অভাব, যা প্রোটিন, ফ্যাট
এবং কার্বোহাইড্রেট ভাঙার জন্য প্রয়োজন। এই সমস্যা নিরসনে পুষ্টিকর খাদ্য
গ্রহণ, হজম সহায়ক এনজাইম, এবং চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক ওষুধ গ্রহণ জরুরি।
পর্যাপ্ত পানি পান এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসও হজম ক্ষমতা উন্নত
করতে সহায়ক। সঠিক ব্যবস্থাপনা গ্রহন না করলে এই সমস্যা দীর্ঘমেয়াদে
শারীরিক দুর্বলতা এবং পুষ্টিহীনতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এবং মোটা না হওয়ার
বড় একটি কারণ হিসেবে দেখা দিতে পারে।
জিনগত কারণে মোটা না হওয়া
জিনগত কারণ অনেক সময় মানুষের ওজন বা শারীরিক গঠনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, যদি মোটা না হওয়ার কারণ কি? প্রশ্নের উত্তরে জিনগত কারণ দেখাতে চাইলে বোঝাতে হয় যে, আপনার শরীরের গঠনে জিনের প্রভাব কতটুকু বা তা
ওজন বাড়াতে সক্ষম কি না। সক্ষম না হওয়ার কারণ হতে পারে:
- জিনগত বৈচিত্র্য: কিছু জিন যেমন FTO বা MC4R, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এসব জিনের নির্দিষ্ট রূপ থাকলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি কম হতে পারে।
- মেটাবলিজমের ধরন: কিছু মানুষের মেটাবলিজম এত দ্রুত যে তারা সহজে ক্যালরি পোড়াতে পারে, ফলে অতিরিক্ত চর্বি জমার সম্ভাবনা কম থাকে।
- লিপিড মেটাবলিজমে জিনগত প্রভাব:কিছু মানুষের শরীরে ফ্যাট স্টোর করার ক্ষমতা কম থাকে জিনগত কারণে, যা তাদের মোটা হতে বাধা দেয়।
- ক্ষুধা ও পরিপাক নিয়ন্ত্রণকারী জিন:কিছু জিন ক্ষুধা এবং পরিপাক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। যদি জিন ক্ষুধার হরমোন বা অ্যাপেটাইটে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তাহলে ব্যক্তি কম খেতে পছন্দ করে এবং মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার প্রভাবে মোটা না হওয়া
মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা শরীরের উপর বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে
পারে। তবে একেকজনের ওপর এর প্রভাব একেক রকম হয়। অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ী
মানসিক চাপ অথবা দুশ্চিন্তা হরমোনাল ভারসাম্যহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বিশেষ করে কার্টিসল হরমোনের মাত্রা যখন বেড়ে যায়। এটি শরীরে বিশেষ করে
পেটে চর্বি জামাতে উৎসাহিত করে। তবে কিছু মানুষের উপর মানসিক চাপ বিপরীত
প্রভাব ফেলতে পারে যেমন কখনো কখনো ক্ষুদা হ্রাস পেয়ে খাদ্য গ্রহণ কমে
যায়। যার ফলে ওজন বাড়তে বাধাগ্রস্ত হয়। এবং মোটা হওয়া যায় না।
অন্যদিকে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার কারণে কিছু মানুষের শরীরে মেটাবলিজমের
হার বেড়ে যায় উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তা শরীরের ফাইট অর ফ্লাইট প্রতিক্রিয়া
সক্রিয় করে দেয়। যা হৃদস্পন্দন ও শক্তি ব্যয় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এর
ফলে ফ্যাট জমতে না পারায় ওজন বাড়ার প্রবণতা রোধ হয়। পাশাপাশি এই
পরিস্থিতি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে কারণ এটি মাংসপেশির
ক্ষয়, শক্তির ঘাটতি এবং শারীরিক দুর্বলতার মত সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই
মানসিক চাপ কে নিয়ন্ত্রণ রাখা এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
মোটা হওয়ার জন্য যে সব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
মোটা না হওয়ার কারণ কি? প্রশ্নের আরো একটি উদাহরণ হতে পারে তা হলো কিছু
খাবার এড়িয়ে না চলা। মোটা হওয়ার জন্য সেসব খাবার প্রাথমিক অবস্থায় ওজন
বৃদ্ধি করলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না সেই খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। নিচে
এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা মোটা হওয়ার আশঙ্কা কমাতে এড়িয়ে
চলা উচিত:
- ফাস্ট ফুড: বার্গার, পিজা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইত্যাদি।
- মিষ্টিজাতীয় খাবার: রসমালাই, লাড্ডু, চকলেট, মিষ্টি পানীয়।
- প্রসেসড ফুড:প্যাকেটজাত স্ন্যাকস (চিপস, বিস্কুট)।
- মিষ্টি পানীয় ও সফট ড্রিঙ্কস: কোলা, এনার্জি ড্রিঙ্কস, ফ্লেভারড মিল্ক।
- ভাজাপোড়া: সিঙ্গারা, সমোচা, পুরি।
- চর্বিযুক্ত প্রক্রিয়াজাত মাংস: সসেজ, সালামি, বেকন ইত্যাদি।
চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারনে স্বাস্থ্য শুকিয়ে যাওয়া
কিছু চিকিৎসা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মানুষের ওজন কমে যাওয়া বা শরীর
শুকিয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পেছনে অনেক
কারণ থাকতে পারে, যেমন বিপাকীয় কার্যকলাপের পরিবর্তন, ক্ষুধা হ্রাস, পুষ্টির
শোষণে বাধা, বা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া। নিচে কিছু চিকিৎসার উদাহরণ
দেওয়া হলো যা এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে:
- কেমোথেরাপি: ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কেমোথেরাপি ওষুধ ক্ষুধা কমিয়ে দেয় এবং বমি বা ডায়রিয়া হতে পারে, যা শরীরের ওজন হ্রাসের কারণ হতে পারে।
- থাইরয়েড ওষুধ:অতিরিক্ত মাত্রায় থাইরয়েড হরমোন ওষুধ শরীরের বিপাকের হার বাড়িয়ে দেয়, যা দ্রুত ওজন কমার কারণ হতে পারে।
- ডায়াবেটিসের চিকিৎসা: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কিছু ওষুধ শরীরের চর্বি ও গ্লুকোজ ব্যবহারের ধরণ পরিবর্তন করতে পারে, যা ওজন কমানোর কারণ হতে পারে।
- মেন্টাল হেলথের ওষুধ: কিছু অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ (যেমন SSRI বা MAOI) ক্ষুধা হ্রাস করতে পারে।
- স্টেরয়েড থেরাপি: দীর্ঘমেয়াদি স্টেরয়েড ব্যবহার কখনও কখনও পেশি ক্ষয় করতে পারে, যদিও এটি ওজন বাড়াতেও পারে।
- হার্ট বা কিডনির রোগের চিকিৎসা: কিছু ডায়ুরেটিক ওষুধ শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়, যা ওজন হ্রাসের মত মনে হতে পারে।
- অ্যান্টি-ক্যান্সার ইমিউনোথেরাপি: এটি রোগীর শক্তি কমিয়ে দিতে পারে এবং পেশি ক্ষয়ের কারণ হতে পারে।
শেষ কথা
সুস্থ সবল দেহ কে না চায়। কিন্তু সবাই কি স্বাস্থ্যবান হতে পারে? অনেকেই মোটা হওয়ার অনেক চেষ্টা করার পরেও সঠিক ফলাফল পাচ্ছেন না। এই সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদেরকে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আশা করি বোঝাতে পেরেছি মোটা না হওয়ার কারণ কি? জিনগত কারণ, হরমোন জনিত কারণ, মানসিক দুশ্চিন্তা অথবা পুষ্টিকর খাবারের অভাবে অনেকেই মোটা হতে পারেন না। তাই, মোটা হতে চাইলে পুষ্টিকর খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রতিদিন অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করে প্রয়োজনের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
শেষ পাতার কমেন্ট পলিসি মেনে কমেন্ট করুন।
comment url